ড: জাকির নায়েকের জীবনী

ড: জাকির নায়েক

dr-zakir-naik-speech.jpeg

জাকির আবদুল করিম নায়েক ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫ সালে ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট পিটার্স হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি কিশিনচাঁদ চেল্লারাম কলেজে ভর্তি হন। তিনি মেডিসিনের ওপর টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নাইর হসপিটালে ভর্তি হন। অতঃপর, তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বাই থেকে ব্যাচেলর অব মেডিসিন সার্জারি বা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

dr-zakir-naik.jpeg

১৯৯১ সালে তিনি ইসলাম-ধর্ম প্রচারের কার্যক্রম শুরু করেন এবং আইআরএফ প্রতিষ্ঠা করেন। নায়েকের স্ত্রী, ফারহাত নায়েক, ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নারীদের শাখায় কাজ করেন।

ডাঃ জাকির নায়েক বলেন তিনি আহমেদ দিদাতের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন, যার সাথে তিনি ১৯৮৭ সালে সাক্ষাত করেন। ডাঃ জাকির নায়েককে অনেক সময় ‘‘দিদাত প্লাস’’ বলা হয়, এই উপাধি দিদাত নিজে দেন।

এছাড়াও তিনি মুম্বাইয়ের ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং ইউনাইটেড ইসলামিক এইডের প্রতিষ্ঠাতা, যা দরিদ্র ও অসহায় মুসলিম তরুণ-তরুণীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে।

ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে তাকে “পিস টিভি নেটওয়ার্কের পৃষ্ঠপোষক ও আদর্শিক চালিকাশক্তি” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

যে চ্যানেলটি “সমগ্র মানবতার জন্য সত্য, ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, সৌহার্দ্য ও জ্ঞানের” প্রচারের লক্ষ্যে কাজ করে বলে এর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৬ সালে, একটি প্রেস কনফারেন্সে, জাকির নিজেকে নন-রেজিস্ট্যান্ট ইন্ডিয়ান (এনআরআই) বা বছরের অর্ধেকের বেশী সময় প্রবাসে বসবাসকারী ভারতীয় হিসেবে দাবি করেন।

বক্তৃতা ও বিতর্ক

জাকির নায়েক ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত অনেক বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ও বিতর্ক করেছেন। তিনি বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় কোরআন ও হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন। বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইসলামের অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা তার অন্যতম কৌশল। নৃতত্ত্ববিদ থমাস ব্লম হানসেন লিখেছেন যে, ডাঃ জাকিরের বিভিন্ন ভাষায় কুরআন ও হাদিস সাহিত্য মনে রাখার ভঙ্গী ও তার ধর্মপ্রচার কর্মকাণ্ড মুসলিমদের মাঝে তাকে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় করে তুলেছে। তার অনেক বিতর্ক রেকর্ড করা হয় এবং ভিডিও, ডিভিডি আকারে ও অনলাইনে বিস্তৃত পরিসরে বিতরণ করা হয়। তার আলোচনা ইংরেজিতে রেকর্ড করা হয়ে থাকে এবং সপ্তাহ শেষে মুম্বাইয়ের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন ক্যাবল নেটওয়ার্কে এবং তার নিজস্ব প্রযোজনাধীন পিস টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়। তার আলোচনার বিষয়বস্তুগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল: “ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞান”, “ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম”, এবং “ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ”।

তার প্রথম বিতর্ক হয় ১৯৯৪ সালে, বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের “লজ্জা” নামক বইকে কেন্দ্র করে মুম্বাই মারাঠি পত্রাকর সংঘ কর্তৃক আয়োজিত একটি বিতর্ক, যার শিরোনাম ছিল “ধর্মীয় মৌলবাদ কি মত-প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাধাস্বরূপ?”। চারজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে কয়েকঘণ্টা ব্যাপী এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জাকির বইটি থেকে ইসলামকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্ধৃতিকে ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি হিসেবে দাবি করে বক্তব্য দেন এবং তা সবার নজর কেড়ে নেয়। তার অন্যতম বিখ্যাত বিতর্ক হয় ২০০০ সালের এপ্রিলে ‘বিজ্ঞানের আলোয় কুরআন ও বাইবেল’ বিষয়ে শিকাগোতে উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের সাথে। তিনি বলেন, ‘ইসলাম একটি কার্যকারণ ও যুক্তির ধর্ম এবং কুরআনে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রায় ১০০০ আয়াত আছে।’ সেখানে তিনি পশ্চিমা কনভার্টের সংখ্যা ব্যাখ্যা করেন। জাকিরের অন্যতম জনপ্রিয় থিম হল বিজ্ঞানের সূত্র দিয়ে কোরআনকে যাচাই করা।২১ জানুয়ারি ২০০৬ জাকির শ্রী শ্রী রবিশঙ্করের সাথে ‘ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর’ বিষয়ে ব্যাঙ্গালোরে বিতর্ক করেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে , নায়েক ভারত থেকে সরাসরি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের সঙ্গে কথোপকথন করেন। ড: জাকির নায়েক বর্তমানে মালেশিয়ায় স্থায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করছেন।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post